ঢাকা,রোববার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

পর্যটকে মুখরিত প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন ঝুঁকিনিয়ে ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে দুই জাহাজকে ২লাখ টাকা জরিমানা

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, টেকনাফ ::
স্বপ্নের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমনের উদ্দেশ্যে টেকনাফের দমদমিয়া পর্যটকবাহী জাহাজ গুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় আনন্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন। এদিকে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে যাচ্ছে পর্যটকবাহী জাহাজগুলো।
ফলে যে কোন মুহুর্তে অপ্রীতিকর দূর্ঘটনার আশংকা করছেন দুর দুরান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকরা। আজ ২৩ ডিসেম্বর  জাহাজঘাটে গিয়ে সেই অপরাধের চিত্র নিজ চোঁখে দেখতে পায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অতিরিক্ত ঝূঁকিতে যাত্রী বহন করার দায়ে এলসিটি কুতুবদিয়া ও খিজরী জাহাজকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জাহিদ হাসান ছিদ্দিক।
এদিকে প্রতিদিন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বাৎসরিক বা ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হওয়ার কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমনে বেরিয়ে পড়েছেন। অনেকে স্বপ্নের দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমনের জন্য টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে টিকেটের জন্য ভীড় করছেন।
২৩ ডিসেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, দেশ বিদেশের হাজার হাজার পর্যটক জাহাজে উঠার জন্য ভীড় করেছেন। অনেক নারী পুরুষ দীর্ঘ লাইনে দাড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। জাহাজের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত টিকেট বিক্রি করছে কর্তৃপক্ষ। অনেকে কাউন্টারে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড় দেখে হাতিয়ে নিচ্ছে টিকেটের দ্বিগুন মুল্য। এদিকে টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন নৌ রুটে ৬ টি জাহাজ চলাচল করছে। এতে কেয়ারী সিন্দাবাদের ধারন ক্ষমতা ৩৪৬ জন, কেয়ারী ক্রুজ এন্ড ডাইনের ৩২০ জন, এসটি শহীদের ২০০ জন, গ্রীন লাইনের ১২৫ জন, খিজরী ২৩০ জন ও এলসিটি কুতুবদিয়া জাহাজের ধারন ক্ষমতা ৫৭০ জন। প্রতিটি জাহাজ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুন যাত্রী বহন করে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে সকাল সাড়ে ৯ টায় রওয়ানা দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সেন্টমার্টিনে পৌঁছে। ধারন ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় আরো কযেকশত পর্যটক সেন্টমার্টিন যেতে পারেনি। তাদের মধ্যে অনেকে ছোট ছোট ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে করে ঝুঁকি নিয়ে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছে। এতে নারী পুরুষ ও শিশু রয়েছে। ফলে যে কোন মুহুর্তে দূর্ঘটনার আশংকার করছেন স্থানীয় সচেতনমহল।
অপরদিকে অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ পর্যটক বহনের দায়ে এলসিটি কুতুবদিয়া ও খিজরী জাহাজকে ১ লাখ টাকা করে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া সেন্টমার্টিনের হোটেল মোটেলগুলো আগে থেকে বুকিং হয়ে আছে। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। সেন্টমার্টিনে ছোট বড় ১৩০ টি হোটেল মোটেল রয়েছে। অনেকে ঘরবাড়ীতেও রুম সাজিয়ে পর্যটকদে ভাড়া দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা।
সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, দ্বীপের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও পর্যটকদের জন্য পূর্ণ নিরাপত্তা রয়েছে। হোটেল মোটেল গুলোতে যাতে অতিরিক্ত টাকা ও পর্যটকদের হয়রানী না করে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পর্যটকদের জন্য কোন স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটকদের অনেক সময় দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
এই ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, কোন প্রকারেই যেন জাহাজ গুলো অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে চলাচল করতে না পারে সেই দিকে কঠোর নজরদারী অব্যাহত থাকবে। তার পাশাপাশি জাহাজগুলোর কর্তৃপক্ষকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও যারা নির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

পাঠকের মতামত: